ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ফার্মগেট এলাকা। এ সময় ছাত্ররা অর্ধশত গাড়ি ভাংচুর করে। এতে ফার্মগেট ও আশেপাশের এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পরে। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
রবিবার বিকালে রাজধানীর ফার্মগেটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
এ সময় শিক্ষার্থীরা তেজগাঁও কলেজের বিবিএ-কম্পিউটার সাইন্স ভবনসহ প্রায় অর্ধশত গাড়ি ও দোকানপাটে ভাংচুর চালায়। ফলে এই এলাকায় প্রায় আধঘন্টা ধরে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এতে ঘরমুখী মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৬/৭ রাউন্ড টিয়ার সেল ছুঁড়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিরপুর রুটের চৈতালী-১ বিআরটিসি দোতালা বাস তেজগাঁও কলেজের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় হানিফ মেট্রো সার্ভিসের বাস কাউন্টারের সামনে ঐ কলেজের ২ শিক্ষার্থী বাসে ওঠার চেষ্টা করে। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঐ ২ শিক্ষার্থীর পরিচয় পত্র দেখতে চায়।
এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাক-বিত-ার একপর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা তাদের মারধর করে ঘটনাস্থল থেকে চলে যায়।
এ খবর তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছলে তারা জড়ো হয়ে কলেজের সামনে অবস্থান নেয়। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিরপুর রুটের বৈশাখী বাসটি সেখানে পৌঁছলে তেজগাঁও কলেজের ছাত্ররা ঐ বাসে হামলা চালায়। এতে গাড়ির কাঁচ ভেঙ্গে ঢাবির ২ ছাত্রীর আহত হয়। এ খবরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরো ২টি বাস ফার্মগেট ওভারব্রীজের নীচে পৌঁছে ও মানিক মিয়া এভিনিউতে প্রবেশের মুখে আড়াআড়ি করে রেখে ব্যারিকেড দেয় শিক্ষার্থীরা।
তারা তেজগাঁও কলেজের সামনে গিয়ে কলেজের প্রধান ফটক ভেঙ্গে ভিতরে ঢুকে ব্যাপক ভাংচুর চালায়। বিবিএ-কম্পিউটার সাইন্স ভবন লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ফুটপাতে কয়েকটি দোকানও ভাংচুর করে ছাত্ররা। একপর্যায়ে তারা হানিফ মেট্রো সার্ভিসের কাউন্টারেও হামলা চালায়। এসময় তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থীরাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়া ও ইট পটকেল নিক্ষেপ চলতে থাকে দীর্ঘ সময়।
পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করতে বাধ্য হয়।
পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শেরেবাংলা নগর থানার ওসি আব্দুল মমিনের কাছে একটি অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগটি মামলা হিসাবে গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ ৫ রাউন্ড রাবার বুলেট ও ৬/৭ রাউন্ড টিয়ার সেল ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে এনেছে।
অন্যদিকে, ঘটনার পর ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুইশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সমঝোতা করা চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। একপর্যায়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সরিয়ে দেয়। বেলা সাড়ে ৫ টার দিকে এই এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পর যানবাহন চলাচল শুরু হয়।