বৃহস্পতিবার শোকাবহ ১৫ আগস্ট। ১৯৭৫ সালের এ দিনে সেনাবাহিনীর কতিপয় বিদ্রোহী সদস্যের হাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়িতে সপরিবারে নিহত হন।
ওই দিন বঙ্গবন্ধু ছাড়াও আরো যারা হন, তারা হলেন- বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী শেখ ফজিলাতুননেসা মুজিব, তার তিন ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল, নবপরিণীতা দুই পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর ছোটভাই মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছেলে আরিফ সেরনিয়াবাত, মেয়ে বেবী সেরনিয়াবাত, শিশুপৌত্র সুকান্ত বাবু, বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি, তার স্ত্রী বেগম আরজু মনি, নিকটাত্মীয় শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুল নঈম খান রিন্টু, বঙ্গবন্ধুর জীবন বাঁচাতে ছুটে যাওয়া কর্নেল জামিল উদ্দিন আহমেদসহ কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী।
বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা সেই দিন বিদেশে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান।
আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ১৫ আগস্ট রাষ্ট্রীয়ভাবে শোক দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়। এবারও যথাযথ মর্যাদায় রাষ্ট্রীয়ভাবে পালিত হবে দিনটি।
বাংলাদেশ বেতার এবং বাংলাদেশ টেলিভিশন শোক দিবসের অনুষ্ঠান সরাসরি সমপ্রচারসহ বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হবে সংবাদপত্রে।
এ উপলক্ষে আওয়ামী লীগ ২ দিনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচিতে রয়েছে দিনের শুরুতে ভোরে বঙ্গবন্ধু ভবন এবং কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সংগঠনের সকল স্তরের কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন।
সকাল সাড়ে ৬টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিজড়িত ধানমন্ডিস্থ বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রাঙ্গণে রক্ষিত প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন।
সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, মাজার জিয়ারত, ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত ও মিলাদ মাহফিল।
সকাল ১০টায় টুঙ্গীপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন, ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত। সকাল ১১টায় সমাধি প্রাঙ্গণে মিলাদ ও বিশেষ দোয়া মাহফিল। এ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ নেতৃবৃন্দের একটি প্রতিনিধিদল ও সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যোগদান করবেন।
বাদ জোহর দেশের সব মসজিদে মিলাদ মাহফিল। সুবিধামতো সময়ে মন্দির, প্যাগোডা, গির্জা, উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা। দুপুরে দুঃস্থদের মধ্যে রান্না করা খাবার বিতরণ। বাদ আছর বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল।
পরদিন শুক্রবার বিকাল সাড়ে তিনটায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের উদ্যোগে আলোচনা সভা। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তৃতা করবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভাপতিত্ব করবেন দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী।
দলটির সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৩৮তম শাহাদতবার্ষিকী যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগম্ভীর পরিবেশে দেশবাসীকে সাথে নিয়ে পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন।
এছাড়া আওয়ামী লীগের জেলা, মহানগর, উপজেলা, পৌর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডসহ সব শাখাকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ রেখে দিবসটি পালনের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।